Significance of Yudhishther Going to Heaven with Physical Body (Bengali)

প্রঃ যুধিষ্ঠিরের সশরীরে স্বর্গলাভের তাৎপর্য ?

উঃ মহাভারতে বর্ণিত পাণ্ডব পুত্রদের মধ্যে জেষ্ঠ হলেন যুধিষ্ঠি, যাঁকে আকাশ তত্ত্ব বলে বর্ণনা করা হয়। আকাশ অর্থে শুন্যস্থান বা বিশাল ফাঁকা জায়গা , যা চিরস্থির এবং সকল অবস্থায় অপরিবর্তনীয়। এই মানব দেহ গঠিত পঞ্চভূতে এবং পঞ্চপান্ডবের অন্যান্য ভাইয়েরা হলেন যথাক্রমে ভীম অর্থাৎ বায়ু তত্ত্ব, অর্জুন অর্থাৎ তেজ বা শক্তি তত্ত্ব, নকুল অর্থাৎ জল তত্ত্ব এবং সহদেব অর্থাৎ ক্ষিতি তত্ত্ব। আমাদের দেহ গঠিত এই পঞ্চতত্বের সমন্বয়ে।
ঠিক এভাবেই মৃত্যুর পর মানব শরীর আকাশেই লীন হয়। কবরস্থ দেহ মাটিতে, দাহ করলে তা ধূম্রের সাহায্যে বাতাসে, জলে ভাসালে জলে ইত্যাদি নানা প্রকারে এই দেহতত্ত্ব গুলি সূক্ষাতি সূক্ষ কণায় রূপান্তরিত হয়ে আবার আকাশেই চলে যায়। একেই বলে যুধিষ্ঠিরের সশরীরে স্বর্গলাভ।

অধ্যাত্মিক দিক থেকে বিচার করলে বলা যায়, পাণ্ডবগণ অর্থাৎ পঞ্চতত্ত্ব মানব শরীরের পঞ্চচক্রে অবস্থান করে যেমন যুধিষ্ঠির বিশুধ্যাক্ষ অর্থাৎ কন্ঠের পশ্চাদে স্থিত যে চক্র তাতে অবস্থিত, যা আকাশতত্ত্ব বলে পরিচিত। ভীম – (বায়ুতত্ত্ব) অনাহতচক্রে যার অবস্থান, অর্জুন – (তেজতত্ত্ব) মণিপুর চক্রে যার অবস্থান, নকুল – (জলতত্ত্ব) স্বাধিষ্ঠান চক্রে যার অবস্থান এবং সহদেব – (ক্ষিতিতত্ত্ব) মূলাধার চক্রে যার অবস্থান।

প্রাণ কর্মের দ্বারা আত্মশক্তি এই পঞ্চতত্ত্ব ভেদ করে আজ্ঞাচক্রে উত্থিত হলে তা কূটস্থে স্থির হয় এবং জ্যোতি দর্শন হয়। এই অবস্থায় সাধকের দেহ বোধ আর থাকে না, এবং সাধক এক আনন্দ ও শান্তির অনুভূতিতে বিরাজ করে। এই সময়ে শ্বাস বায়ুর গতি ক্রমে ধীর হতে থাকে এবং এক সময়ে তা অলক্ষ হয়ে যায় অর্থাৎ রুদ্ধ হয়, তখন এমন অবস্থা হয় যে শ্বাস নেওয়া বা ত্যাগ করার প্রয়োজন হয় না, এই সময়ে মন, প্রাণ ও আত্মা একীভূত হয়ে আরও উর্দ্ধগামী হয় এবং চরমস্থিরাবস্থা প্রাপ্ত হয়। অথচ স্থুল দেহ একই রকম পূর্বাবস্থায় অবস্থান করে। অধ্যাত্মিক মতে এই হল যুধিষ্ঠিরের সশরীরে স্বর্গলাভ।

Written / Submitted By: Lopamudra Saha, Kolkata region, India.

[siteorigin_widget class=”WP_Nav_Menu_Widget”][/siteorigin_widget]